মুদ্রা পাচারের দুটি মামলায় ডেসটিনি ২০০০ এর পাঁচ কর্মকর্তাকে জামিন দেওয়ার আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ দুটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন ডেসটিনির আরো ১৭ কর্মকর্তা। দুদকের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মিঠু ডেসটিনি ২০০০ এর সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারুন-অর-রশিদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমিনসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সোমবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে দুটি রিভিশন আবেদন করেন। এতে বলা হয়, মুদ্রা পাচার আইন অনুযায়ী কোনো আসামির জামিন আবেদন শুনানি করার এখতিয়ার হাকিম আদালতের নেই। এই এখতিয়ার শুধু বিশেষ জজ আদালতের। ফলে ডেসটিনি কর্মকর্তাদের জামিনের আদেশটি অবৈধ হয়েছে। রফিকুল ইসলাম মিঠু বলেন, জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আক্তারুজ্জমান আবেদন দুটি গ্রহণ করেছেন। পরে এ বিষয়ে শুনানির তারিখ দেওয়া হবে। এদিকে এ দুটি মামলার আসামি ডেসটিনির বাকি ১৭ কর্মকর্তা সোমবার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন। তবে মামলার নথিপত্র ইতোমধ্যে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে পাঠিয়ে দেওয়ায় তাদের আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি। দুদকের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মিঠু বলেন, “যেহেতু জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ রিভিশন আবেদন শুনানির জন্য মামলার নথি তলব করেছেন, সেহেতু আজ এই আত্মসমর্পণ আবেদনের শুনানির কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মহানগর হাকিম মো. আতাউল হক।” সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর বিদেশে পাচারের অভিযোগে গত ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেশন (এমএলএম) ও ট্রি-প্লান্টেশেন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ পাচারের ‘প্রমাণ’ পেয়ে দুদকের উপপরিচালক মো. মোজাহার আলি সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করেন। তারা সেদিন সাংবাদিকদের জানান, ট্রি-প্লান্টেশন প্রজেক্ট থেকে ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা এবং এমএলএম অ্যাকাউন্ট থেকে ১ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা সরানোর আলামত পেয়েছেন তারা। মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, উভয় ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত কর্মকর্তারা প্রথমে বিভিন্ন অলাভজনক, নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানে এবং এরপর নিজেদের ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন। ডেসটিনির সভাপতি হারুন-অর-রশিদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আমিনসহ পাঁচ কর্মকর্তা গত ৬ অগাস্ট এ দুই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তা মঞ্জুর করে।

 
                    